বাংলাদেশের সংসদে আইন পাস করে কোটা সংস্কার না করা পর্যন্ত আন্দোলন ও কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক আবু বকর মজুমদার বলেন, ‘চলমান কোটা আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা এখনও পর্যন্ত কোনো আশ্বাস পাইনি। যতদিন সংসদে কোটার সংস্কার করে আইন পাস না করা হবে, ততদিন আন্দোলন ও কর্মসূচি চালিয়ে যাবো আমরা।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ১৪ জুলাই ক্লাস ধর্মঘটের পাশাপাশি জাতীয় সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে সরকারি সব চাকরিতে সব গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারক লিপি পাঠানো হবে।
এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সাত কলেজ, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার আশপাশের সব বিশ্ববিদ্যালয় এ গণপদযাত্রায় অংশ নেবে।
‘ আমরা মুক্তিযোদ্ধা কোটাবিরোধী নই। নাতি- নাতনিরা পাবে, আমরা এটা চাই না। সন্তান পর্যন্ত ঠিক আছে। ৫ শতাংশ কোটা পদ্ধতি চাই। আমরা চাই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা এবং মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জন্য কোটা।
সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা আমাদের আন্দোলন, কর্মসূচি অব্যাহত রাখবো দাবি না মানা পর্যন্ত । ততদিন আমরা ক্লাস, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবো না। আশা করি, আমাদের যৌক্তিক দাবিতে শিক্ষকরাও পাশে থাকবেন।’
তিনি আরও বলেন, পুলিশ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে সাংবিধানিক অধিকারকে ক্ষুণ্ন করছে। মামলা প্রত্যাহার করতে হবে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ।
সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রেখে বাকি কোটা বাতিল করে সংসদে আইন পাসের এক দফা দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে’ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, হাইকোর্ট সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন গত ৫ জুন। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গত ৪ জুলাই ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখার নির্দেশ দেন। এরপর ১০ জুলাই হাইকোর্টের দেয়া রায়ে চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা দেন আপিল বিভাগ।
previous post