নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামসের জনপ্রিয়তা মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, ৬৯ শতাংশ বাসিন্দা মনে করছেন যে অ্যাডামসের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত, এবং এটি বিশেষত ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ৭১ শতাংশের মতামতের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
এছাড়া, ৮০ শতাংশ জনগণের মতে, অ্যাডামসকে পরবর্তী মেয়র নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত নয়। এই ধরনের জনমত এবং জরিপের ফলাফল মেয়রের নেতৃত্বের ওপর গভীর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে এবং এর ফলে তার রাজনৈতিক অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।
তার প্রশাসনের ওপর জনমতের এই বিপুল নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তার রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মেয়র অ্যাডামসের বিরুদ্ধে বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ রয়েছে যা তার জনপ্রিয়তায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, দুর্নীতি, এবং বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে রাজনৈতিক অনুদান নেওয়ার অভিযোগ এমন কিছু বিষয়, যা জনমনে বিরূপ ধারণা তৈরি করে।
এছাড়া, সাক্ষী প্রভাবিত করার অভিযোগও বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলেছে। প্রসিকিউটরদের মতে, তিনি একজন সাক্ষীকে এফবিআই-এর সামনে মিথ্যা বলার নির্দেশ দিয়েছেন, যা তার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কার্যকলাপের অভিযোগের মাত্রা বাড়িয়েছে।
এ ধরনের অভিযোগগুলি সাধারণত তদন্তের একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া শুরু করে এবং এর ফলস্বরূপ আরও নতুন অভিযোগও উঠতে পারে। মেয়রের বিরুদ্ধে এই ধরনের গুরুতর অভিযোগ হলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি খুব অস্থির হয়ে পড়ে এবং এটি তার প্রশাসনের কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
অ্যাডামসের পরবর্তী আদালতে হাজিরার তারিখ ১ নভেম্বর নির্ধারিত হওয়া এবং ডিসেম্বরে আরও একটি শুনানির তথ্য রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তার আইনজীবীরা দ্রুত বিচার চাইলেও, মামলার প্রক্রিয়া যদি মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত গড়ায়, তাহলে এটি তার জন্য আরও চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আদালতের পরবর্তী শুনানিগুলোর ফলাফল তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে আরও দুর্বল করতে পারে। যদি অভিযোগগুলো প্রমাণিত হয়, তাহলে এটি তার নেতৃত্বের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে এবং সম্ভবত তিনি রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারেন।
নিউ ইয়র্কের জনগণ মেয়র অ্যাডামসের পদত্যাগ চাইলেও,জরিপ অনুযায়ী ৬৩ শতাংশ বাসিন্দা গভর্নর ক্যাথি হোকুলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যে তিনি অ্যাডামসকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করুক।
মেয়র অ্যাডামস যদি পদত্যাগ না করেন, তাহলে গভর্নর হোকুলের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে তাকে অপসারণের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। ইতোমধ্যে গভর্নর হোকুল অ্যাডামসের প্রশাসনে পরিবর্তনের জন্য চাপ সৃষ্টি করেছেন।
গভর্নর হোকুল বলেছেন, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি, সিটি হলে পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। মেয়র তার প্রশাসনের দায়িত্বশীল অবস্থান নিশ্চিত করবেন বলে আমরা আশা করি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যাডামসের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো তার প্রশাসনের ভবিষ্যৎকে বড় ধরনের সংকটে ফেলেছে। জনমতের বিপুল বিরোধিতা, তদন্তের চাপ, এবং প্রশাসনের ভেতরে অস্থিরতার কারণে অ্যাডামসের জন্য আগামী দিনগুলো চ্যালেঞ্জপূর্ণ হতে পারে। তার আগামী আদালত শুনানিগুলো তার রাজনৈতিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ মোড় আনতে পারে।
previous post