পাঁচ মাসের ব্যবধানে আরও একটি ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ তৈরি হয়েছে, যা ধাপে ধাপে রূপ বদলে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এমনটাই আভাস দিয়েছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এবারের ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে ‘ডানা’। এর আগে সবশেষ গত ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ বাংলাদেশ উপকূল ও পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানে। ওই ঝড়ের তাণ্ডবে বাংলাদেশ ও ভারতে মোট ৭৬ জনের মৃত্যু হয়।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, স্থানীয় সময় সোমবার বিকাল বা পরশু দিন সকালের মধ্যে এটি নিম্নচাপে পরিণত হবে। পরে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার পর বোঝা যাবে এটা কোন দিকে যাবে। উড়িষ্যা যাবে না, বাংলাদেশে আঘাত হানবে। লঘুচাপের প্রভাবে বুধবারের দিকে বৃষ্টি বাড়বে, যা দুই-তিন দিন থাকতে পারে বলে জানান বজলুর রশীদ।
আবহাওয়া অফিস জানায়, বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিলে এর নাম হতে পারে ‘ডানা’। নামটি প্রস্তাব করেছে কাতার। আরবিতে এর অর্থ অতি সুন্দর ও মূল্যবান মুক্তা। আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয় বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপ। এ অঞ্চলের ১৩টি দেশের দেওয়া নামের তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে নতুন ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা হয়।
এদিকে, ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন আন্দামান সাগরে অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে মঙ্গলবারের মধ্যে নিম্নচাপ এবং বুধবারের মধ্যে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। পরে সেটি অগ্রসর হয়ে ওড়িশা, অন্ধ্র প্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে।
কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ২০০ কিলোমিটার বৃত্তের মধ্যে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।
এটি মঙ্গলবার নিম্নচাপ, বুধবার দুপুরের মধ্যে গভীর নিম্নচাপ ও একই দিন সন্ধ্যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের স্থলভাগে আঘাত করতে পারে।’ এর আগে যে পথে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ স্থলভাগে আঘাত করে অগ্রসর হয়, ঠিক একই পথে এবারের ঘূর্ণিঝড় এগোবে বলে জানান তিনি।