সারা বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণমিছিল কর্মসূচি পালনে সিলেটে শিক্ষার্থীদের পুলিশ বাধা দেয়। শিক্ষার্থীরা বাধা ডিঙিয়ে যেতে চাইলে কাদানে গ্যাস, গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৮ জনকে আটক করেছে। আহত হয়েছেন অন্তত শতাধিক মানুষ।
জানা যায়, শিক্ষার্থীরা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট থেকে গণমিছিল নিয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে মদিনা মার্কেটের দিকে রওনা হয়।
মিছিলটি মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের সামনে আসলে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। পুলিশ তখন গুলি, কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে। জবাবে শিক্ষার্থীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, লিডিং ইউনিভার্সিটি, মেট্রোপলিটন, টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট, এম সি কলেজে, সিলেট সরকারি কলেজ, মদন মোহন কলেজসহ সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঁচ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী বিক্ষোভে অংশ নেয়।
শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক এবং অভিভাবকদেরও মিছিলে অংশ নিতে দেখা যায়। মিছিলে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু, গণগ্রেপ্তার, নির্যাতনের প্রতিবাদে নানা স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা।
আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, আজকে তো শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ছিল। এখানে পুলিশ, বিজিবি এবং র্যাব যেভাবে নির্বিচারে গুলি করতেছে, মনে হচ্ছে যে দেশের যুদ্ধ লেগে গেছে। এটা কোনো প্রয়োজন ছিল না। ছাত্ররা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে এরা পরিকল্পিত আক্রমণ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ইতিমধ্যে প্রথম সারি গণমাধ্যমগুলোতে আমরা জেনেছি ১০ জন আটক হয়েছেন।
আন্দোলনে যোগ দেওয়া একজন শিক্ষিকা বলেন, আমি একজন সাবেক সাস্টিয়ান, এর চেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমি বাংলাদেশের একজন বৈধ নাগরিক। এই আন্দোলনে প্রথম থেকে আছি এবং থাকব, কারণ এটা একটা ন্যায্য দাবি। সবার উচিত ছাত্রদের পাশে থাকা। তাছাড়া সরকার যেভাবে অগণতান্ত্রিক উপায়ে ছাত্রদের ওপর ন্যক্কারজনকভাবে একের পর এক হামলা করছে, তাতে করে নিজেদের ধরে রাখা দায়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ গালিব বলেন, শান্তিপূর্ণ মিছিলে রাষ্ট্রীয় বাহিনী নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি ছুড়ছে। পাড়া-মহল্লায় ঢুকে গুলি কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। অন্তত ২ শতাধিক আহত হন।